শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর :
উজানে বর্ষণ ও নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। একদিনের ব্যবধানে পানি বেড়েছে প্রায় এক সেন্টিমিটার। ফলে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার দুপুর ১২টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার দশমিক ২২ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টা ও সকাল ৯টায় এই পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার ও ৫২ দশমিক ২ সেন্টিমিটার।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে। তবে ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, তিস্তার উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে গত ৫ দিনে তিস্তা নদীর পানি সমতল পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শনিবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টের পানি ৫২ দশমিক ২ মিটারে প্রবাহিত হয়েছে। যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচে। উজানে দোমুহুনি পয়েন্টে পানি সমতল স্থিতিশীল হওয়ার কারণে তিস্তা নদীর পানি সমতল আগামী ১২ ঘণ্টায় হ্রাস পেতে পারে। তবে উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় এ পানির সমতল পুনরায় বৃদ্ধি পেয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা উপজেলাসহ কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, লালমনিরহাট সদর, হাতিবান্ধা, আদিতমারি, কালীগঞ্জসহ সহ নীলফামারী, গাইবান্দা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের নদী-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া ফসলের খেত পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানির আশঙ্কায় আছেন কৃষকরা। পানি বাড়ার ফলে গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন অনেকে। মানুষের মাঝে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, হঠাৎ রাতে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। পানি বেড়ে যাওয়ায় রাতে আমরা জেগেছিলাম, এখন পানি কিছুটা কমেছে। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘন্টার রিয়াদ মিয়া, আনোয়ার হোসেন ও চেংটু মিয়া জানান, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আতঙ্কিত।
লহ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তিস্তার পানি বেড়েছে। আমরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছি।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, শনিবার সকালে ৫২ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার ছিল। এ সময়ে নদীর পানি বাড়বে আবার কমবে এটাই স্বাভাবিক।